প্রচন্ড গরমে রান্নার সময় শরীর ঠান্ডা রাখার ৭টি উপায়
গরমে রান্নাঘরে কাজ করতে কষ্ট হয়? জেনে নিন রান্নার সময় শরীর ঠান্ডা রাখার সহজ টিপস। আর রান্নাঘরের গরেমেও মাধ্যমে থাকুন সতেজ ও সুস্থ।

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠিক! গরমকালে রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে রান্না করা যেন একেবারে যুদ্ধের মতো মনে হয় না? একদিকে প্রচন্ড গরম, তার উপর চুলার আগুন, ভাপ আর গরম বাতাস, সব মিলিয়ে শরীর ঘেমে একেবারে ক্লান্ত হয়ে উঠতে হয়। কিন্তু কিছু সহজ স্বাস্থ্য টিপস মেনে চললে রান্নার সময়ও শরীর ঠান্ডা রাখা সম্ভব।
আজ আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার করছি রান্নার সময় শরীর ঠান্ডা রাখার ৭টি স্বাস্থ্য টিপস— যা মেনে চললে আপনি রান্নাঘরের গরমেও থাকবেন হালকা, সতেজ, আর স্বস্তিতে।
রান্নার সময় শরীর ঠান্ডা রাখার স্বাস্থ্য টিপস
প্রচন্ড গরমে রান্নার সময় শরীর ঠান্ডা রাখতে প্রথমত রান্নাঘরে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া রান্নার সময় পর্যাপ্ত পানি, শরবত, দই, শসা-লাউ ও ফল জাতীয় খাবার খান। সকালে বাইরের তাপমাত্রা বাড়ার আগে দ্রুত রান্না করুন এবং সন্ধ্যার পর রান্না করতে পারেন।
এই টিপসগুলো অনুসরণ করে নিজেকে কিছুটা সতেজ ও স্বস্তিতে রাখতে পারবেন।
১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
রান্নার সময় শরীর ঘামে বেশি, তাই দ্রুত পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই বারবার অল্প অল্প করে পানি পান করুন। তবে একেবারে বরফ ঠান্ডা পানি নয়, বরং সাধারণ ঠান্ডা পানি খান। এতে শরীর স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা থাকবে এবং হজমও ঠিক থাকবে।
এছাড়া স্বাভাবিকভাবে রান্নাঘর ঠান্ডা রাখা প্রয়োজন, এতে রান্নার সময় তেমন গরম অনুভুত হবে না।
২. ঢিলেঢালা এবং সুতির কাপড় পরুন
রান্নার সময় টাইট জামা এড়িয়ে হালকা সুতির শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ পরুন, যা ঘাম শোষণ করে এবং বাতাস চলাচল করে। আমি বেশিরভাগ সুতির ঢিলেঢালা সালোয়ার কামিজ পড়ি। আমার অভিজ্ঞতায়, এতে গরম কিছু কম অনুভুত হয় এবং রান্না করতে আরাম লাগে।
৩. দই, লাচ্ছি বা কোন শরবত পান করুন
দই ও লাচ্চি পেট, শরীর ও ব্রেইন অসাধারণ ঠান্ডা রাখে। এগুলো শুধু শরীর ঠান্ডা রাখে না, হজমেরও উন্নতি ঘটায়। অথবা, লেবু বা তেঁতুলের শরবত, অথবা ফলের স্মুদি পান করতে পারেন। রান্নার মাঝামাঝিতে এক গ্লাস লাচ্চি বা শরবত আপনাকে তৎক্ষণাৎ ফ্রেশ অনুভূতি দিবে।
৪. ঠান্ডা খাবার, শসা ও ফল খান
প্রচন্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার সেরা উপায় হলো জলীয় উপাদানে ভরপুর সবজি খাওয়া। শসা, লাউ, তরমুজ বা অন্যান্য সতেজ সবজি রান্নার সময় সালাদ হিসেবে খেলে শরীরের ভেতরের গরম অনেকটাই কমে যায়। রান্নার তালিকায়ও লাউ বা শসা যোগ করতে পারেন।
৫. রান্নাঘরে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করুন
রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল থাকলে শরীরে গরম কম অনুভব হয়। তাই রান্নাঘরের জানালা খুলে রাখুন, ফ্যান বা এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন। এতে ভাপ ও তাপ বাইরে বেরিয়ে যাবে এবং আপনি ঠান্ডা পরিবেশে রান্না করতে পারবেন। দেখুন কিভাবে রান্নাঘরে বাতাস চলাচল বাড়াবেন।
৬. সকাল বা সন্ধ্যায় রান্না করুন
দুপুরের অসহ্য গরম এড়িয়ে সকালে একটু তাড়াতাড়ি বা সন্ধ্যায় রান্না শেষ করুন। তখন বাইরের তাপমাত্রা কম থাকার কারণে এতে শরীর কম গরম হয়, এবং রান্নাঘরও ঠান্ডা থাকে। এই রুটিনে রান্না করতেই আমার ভাল লাগে।
৭. ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছে নেয়া বা আইস প্যাক ব্যবহার করুন
অনেকের এমন সমস্যা হয় যে বেশি গরম সহ্য করতে পারেন না। গরমে রান্না করার পর শরীর যেন জ্বলতে থাকে। তারা চটজলদি শরীর ঠান্ডা করার জন্য ঠান্ডা পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মুখ-হাত, ঘাড়, গলা ও কপাল মুছে নিতে পারেন। অথবা আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
শেষ কথা
রান্নার সময় শরীর ঠান্ডা রাখা শুধু স্বস্তির জন্য নয়, বরং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও জরুরি। আশা করি উপরের টিপস গুলো অনুসরণ করে রান্নাঘরের গরমে নিজেকে কিছুটা হলে সতেজ ও স্বস্তিতে থাকতে পারবেন।