বেড রুম সাজানোর সেরা আইডিয়া ২০২৪

ছোট বা বড়, যে কোনো বেডরুম সাজানোর জন্য প্রথমেই ঠিক করে নিন ঘরের রং, ফার্নিচার, ওয়াল ডেকোরেশন নিয়ে।

বেড রুম সাজানোর আইডিয়া

বেডরুম সাজানোর আইডিয়া খুঁজছেন? আপনার রুমের স্পেস এবং আসবাব পত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রুম সাজানোর আইডিয়া পেতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে বেডরুম সাজানোর আইডিয়া এবং কিছু কার্যকর টিপস দেবো, যার সাহায্যে আপনি সহজে আপনার বেডরুম, ড্রয়িংরুম সহ ছোট-বড় যেকোন রুমকে আরো সুন্দর এবং আরামদায়ক করে তুলতে পারবেন।

বেড রুম সাজানোর আইডিয়া

আপনার পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের মাধ্যমে ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন। তবে রুম সাজানোর আইডিয়া পাওয়ার জন্য আমাদের কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

থিম নির্ধারণ

আপনার বেডরুম কিভাবে সাজাতে চান, আধুনিক, ক্লাসিক, সিম্পল নাকি গর্জিয়াস তা ঠিক করতে হবে। এজন্য যে বিষয়গুলো মাথায় আনতে হবে, তা হচ্ছে ঘরের রং, ফার্নিচার, বাজেট ইত্যাদি।

  • রং নির্বাচন: আপনার রুমের থিম, পর্দা,ফার্নিচার কি রং হবে সেগুলো ঠিক করে ফেলেন।
  • বাজেট নির্ধারণ: আপনি কত টাকা ব্যয় করতে পারবেন সেটার হিসাব করুন।
  • ফার্নিচারের তালিকা: আপনার কী কী ফার্নিচার প্রয়োজন? বিছানা, সোফা, আলমারি, চেয়ার, টেবিল, বুক সেলফ ইত্যাদি এর জন্য তালিকা তৈরি করুন।
  • বাস্তবায়ন: পরিকল্পনা ও বাজেটের সাথে সমন্বয় করে সুন্দর করে ঘর সাজান।

রঙ নির্ধারণ

রঙ: সাদা, অফ হোয়াইট, হালকা নীল, গোলাপী – এই রঙগুলো শান্তি ও আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে।

এক্সেন্ট ওয়াল: একটি দেওয়াল আলাদা রঙে রাখলে ঘরে একটা নতুন মাত্রা যোগ হয়।

ডার্ক রঙ: যদি আপনি একটি ড্রামাটিক লুক চান, তাহলে নীল বা বেগুনি রঙের মতো  ডার্ক রঙ ব্যবহার করুন।

ফ্লোরিং এ পরিবর্তন: কার্পেটের ব্যবহার রুমে সৌন্দর্যে বিরাট একটি ভূমিকা পালন করে। বিছানার সাথে লাগোয়া কার্পেট হতে পারে আপনার রুমের জন্য চমৎকার সংযোজন, ঘুম থেকে উঠে এতে পা রেখে দারুণ অনুভূতি পেতে পারেন।

বেড রুম সাজানোর আইডিয়া - ফ্লোরিং পরিবর্তন
ফ্লোরিং পরিবর্তন

দেয়াল সাজানো

দেয়ালের রং: পছন্দ অনুযায়ী দেয়ালের রং নির্বাচন করা এবং দেয়ালের রং এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঘরের অন্যান্য আসবাবপত্রের রং নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সাদা রঙ ঘরকে বড় দেখায় এবং অন্য রঙের সাথে ভালো মানায়।

আরও পড়ুন:

ফ্যামিলি ফটো: পরিবারের সাথে সদস্যদের কাটানো মুহূর্তগুলোর ছবি দেয়ালে টাঙিয়ে রাখা যেতে পারে।

ওয়ালমেট: বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং, কোন প্রাকৃতিক দৃশ্য, বাড়িতে তৈরি বা কেনা হস্তশিল্প দিয়ে ঘরের দেওয়ালকে আকর্ষণীয় ভাবে সাজিয়ে তোলা যায়। দেওয়াল সাজাতে সহজ ও আধুনিক ডিজাইনের আর্টওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন।

বেড রুম সাজানোর আইডিয়া - ওয়ালমেট
বেড রুম সাজানোর আইডিয়া – ওয়ালমেট

বেড রুম ফার্নিচার সাজানো

বেড: আপনার বেডটিকে মাঝে এনে তার দুই পাশে সাইড টেবিল রাখতে পারেন। আর টেবিল গুলোর একটিতে ফুলদানি কিংবা টেবিল ল্যাম্প, আর আরেকটিতে ফটো ফ্রেম রাখতে পারেন।

স্টোরেজ: বই, কাপড় ইত্যাদি রাখার জন্য আলাদা আলাদা স্টোরেজ ব্যবহার করুন।

টেবিল ও চেয়ার: আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী পড়ার জায়গা তৈরি করুন। রুমের পরিমাপের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আসবাব সহ যাবতীয় জিনিস রাখুন।

ওয়াল ক্যাবিনেট: যারা ঘরে একদমই বেশি জিনিসপত্র পছন্দ করেন না তারা দেওয়ালে কেবিনেট করে নিতে পারেন। এটিকে ওয়াল কেবিনেট বলে।

এতে প্রচুর পরিমাণ জিনিস রাখা যাবে এবং বেশি আসবাবপত্রের দরকার পড়বে না। সবকিছু সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার জন্য আলাদা আলাদা তাক ব্যবহার করুন। যাতে সময় মতো সহজেই যেকোন জিনিস খুঁজে পাওয়া যায়।

ফার্নিচার বেড রুম সাজানো ছবি
ফার্নিচার বেড রুম সাজানো ছবি

সিটিং এরিয়া: যদি জায়গা থাকে, তাহলে একটি ছোট সিটিং এরিয়া তৈরি করতে পারেন। নান্দনিক ডিজাইনের সোফা দিয়ে সেটিং এরিয়া টাকে সাজাতে পারেন।

Two in One Furniture (টু ইন ওয়ান ফার্নিচার)

যাদের ঘরে জায়গা কম তারা এ ধরনের ফার্নিচার ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- 

  • কিছু কিছু খাটে সাথে ওয়ারড্রবের মত বক্স থাকে যার ফলে আপনি সহজেই খাটে একই সাথে বিছানা ও ওয়ার্ড ড্রবের কাজ করতে পারবেন।
  • আলমারির সামনে দিকে আয়না থাকলে আপনি সেটা দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের কাজ করতে পারেন।
  • এ ছাড়া বর্তমানে এমন অনেক বিছানা রয়েছে যেগুলোকে ফোল্ড করে অনেক সময় সোফা বানানো যায়।
  • বিভিন্ন ধরনের ফোল্ডিং টেবিল এবং চেয়ার রয়েছে যেগুলোকে সহজেই অল্প জায়গার মধ্যে রাখা সম্ভব। 

রুম সাজানোর জিনিস

আর্টওয়ার্ক: পেইন্টিং, পোস্টার, ফটোগ্রাফ দিয়ে দেয়াল সাজান।

ইনডোর প্ল্যান্টস: সবুজাভ পরিবেশের জন্য ইনডোর প্ল্যান্টস রাখতে পারেন। ইনডোর প্ল্যান্টের অসাধারন উপকারিতা আছে, যার ফলে আপনার ঘর আরও প্রাণবন্ত ও প্রশান্তিদায়ক হয়ে উঠবে।

দেখতে পারেন ঘর সাজানোর জন্য কিছু পাতাবাহার গাছ।

আয়না: ঘরকে বড় দেখানোর জন্য আয়না ব্যবহার করা যেতে পারে।

লাইটিং: যেকোনো লাইটিং আপনার ঘরের আউটলুক বদলে দিতে পারে৷ পেনডেন্ট লাইট, টাস্ক লাইট সহ বিভিন্ন ধরনের লাইট ব্যবহার করতে পারেন। রুমের দেয়ালকে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য দেয়ালে সাথে লাইটের ব্যবহার করতে পারেন। জার লাইট কিংবা এলইডি স্ট্রিং লাইটের ব্যবহার আপনার দেয়ালকে সুন্দর করে তুলবে।

বেড রুম সাজানোর আইডিয়া - রুম লাইটিং
বেড রুম সাজানোর আইডিয়া – রুম লাইটিং

সো পিস: আকর্ষণীয় শোপিস দিয়ে ঘরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা যায়।

আর্টিফিশিয়াল ফ্লাওয়ার: দেখতে হুবহুব আসল ফুলের মত আর্টিফিশিয়াল ফুল ব্যবহার করে ঘরের সৌন্দর্য অনেকাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব।

বেডশীট ও পর্দা বাছাই: ঘরের থিম, দেয়ালের রং ও আসবাবপত্রের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেডশীট ও পর্দার রং ও ধরন নির্ধারণ করা উচিত। বেডরুমের পর্দা একটু যাতে ভারী হয় যেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, তাহলে খুব বেশি রোদ প্রবেশ করতে পারবে না।

এক্সেসরিজ এর ব্যবহার: ঘর সাজানোর জন্য অন্যান্য ছোট খাটো প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যবহার করতে পারেন।

বিশেষ টিপস

  • ছোট বেডরুমের জন্য: মিনিমালিস্টিক ডিজাইন, ও হালকা রঙ ব্যবহার করুন।
  • বড় বেডরুমের জন্য: বিভিন্ন জোন তৈরি করুন, যেমন সিটিং এরিয়া, রিডিং কর্নার।
  • পরিবর্তন: সময় সময় বেডরুমের সাজসজ্জা পরিবর্তন করুন।
  • বিভিন্ন ঘরের জন্য আলাদা আইডিয়া ও থিম ব্যবহার করতে পারেন। এতে বাড়ির বিভিন্ন ঘর সাজানোর মধ্যে বৈচিত্রতা আসবে।
  • ঘরে অতিরিক্ত জিনিসপত্র থাকলে আলো বাতাস চলাচলে অসুবিধা হয় ফলে ঘর সুন্দর দেখালেও ঘরে থাকতে অস্বস্তি বোধ হতে পারে।

বেড রুম সাজানো ছবি

বেড রুম সাজানো ছবি
বেড রুম সাজানোর ডিজাইন
বেড রুম সাজানো ছবি

ছোট রুম সাজানোর উপায়

ছোট রুম সাজানোর জন্য ওয়াল ক্যাবিনেট করা এবং টু ইন ওয়ান জাতীয় ফার্নিচার ব্যবহার করা উত্তম। এতে ছোট জায়গার মধ্যে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস সুন্দর করে সাজানো সম্ভব হয়।

ঘর সাজানো মানে অতিরিক্ত জিনিসপত্র দিয়ে ঘর আর বোঝাই করা নয়। ঘরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে উপস্থাপন করাই ঘর সাজানো।

কীভাবে কম খরচে ঘর সাজাবেন

পুরানো জিনিসের পুনঃব্যবহার: আপনার বাড়িতে পুরানো কোনো ফার্নিচার, সজ্জা সামগ্রী বা কাপড় থাকলে তাদের নতুন করে রং করে বা কিছুটা পরিবর্তন করে ব্যবহার করুন।

হস্তশিল্প: পুরানো বোতল, কাগজ, কাপড় দিয়ে নতুন ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করতে পারেন। বাড়িতে থাকা থাকা জিনিস যেমন, ফুলদানি, মোমবাতি, ছবির ফ্রেম ইত্যাদি ব্যবহার করে ঘর সাজাতে পারেন।

রং: একটা দেয়ালের রং বদলে দিলেই ঘরের লুক পুরোপুরি বদলে যেতে পারে। অথবা আপনি যদি ভালো আঁকতে পারেন তাহলে দেয়ালে কোনো পেইন্টিং আঁকতে পারেন।

পোস্টার: পোস্টার কিনে দেয়ালে লাগিয়ে দিন। এতে ঘরের সৌন্দর্য বেড়ে যাবে।

মূলত ঘর সাজানোর জন্য প্রচুর অর্ধে প্রয়োজন নেই। সৌন্দর্য চেতনা এবং ঘরের জিনিসকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারার মাধ্যমে ঘরকে সাজিয়ে তোলা যায়।

আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে সব ধরনের রুম সাজানোর আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং বেড রুম সাজানো ছবি দেখেছেন। যার মাধ্যমে রুম সাজানোর জন্য একটি মৌলিক ধারণা পেয়েছেন।

Similar Posts

Leave a Reply